Iklan

header ads

কথার মারপ্যাঁচ সম্পর্কে ইসলাম ধর্ম কি বলে জানেন কি?

কথার মারপ্যাঁচে অন্যায়ভাবে মানুষকে বিপদে ফেলে দেওয়া, ষড়যন্ত্রের সূক্ষ্ম গুটিতে মানুষকে কুপোকাত করা ঈমানদারের কাজ নয়। এটি মোনাফেকের কাজ, যারা বন্ধুর বেশে মানুষের ক্ষতি করে বেড়ায়। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ হলো দুমুখো মানুষ। এর কাছে আসে এক চেহারায়, ওর কাছে যায় আরেক চেহারায়।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮০৬৯)

কথার মারপ্যাঁচ

উম্মতের ব্যাপারে আমার যে বিষয়গুলোকে ভয় হয়, তন্মধ্যে ভয়ংকর হচ্ছে বাকপটু মোনাফেক। (মুসনাদে আহমদ : ১/২২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন মানুষদের অভিশাপ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, অভিশপ্ত সে, যে কোনো মুমিনের ক্ষতি করে অথবা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের এ অভ্যাস ত্যাগ করে আল্লাহকে ভয় করার আদেশ করেছেন এবং এ ধরনের লোক থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থেকো।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)

মোনাফেকরা বরাবরই মিথ্যাবাদী হয়, তাদের মুখে এক অন্তরে আরেক থাকে। তারা সব সময় মানুষকে বোকা বানিয়ে সুবিধা ভোগ করে, কিন্তু কারো উপকার করার বেলায় তাদের অজুহাতের শেষ থাকে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ মোনাফেকের পরিচয় এভাবে দিয়েছেন, ‘তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট রাখে, কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৮)

হাদিস শরিফে মোনাফেকের পরিচয় দিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মোনাফেকের চিহ্ন তিনটি। (১) যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে। (২) যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে। (৩) আর যখন তার কাছে কোনো আমানত রাখা হয়, সে তার খেয়ানত করে। (বুখারি, হাদিস : ৩৩)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মোনাফেক এবং যার মধ্যে তার একটি দেখা যাবে তার মধ্যে মোনাফেকের একটি স্বভাব থাকবে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিহার করবে—(১) যখন তার কাছে কোনো আমানত রাখা হয়, সে তা খেয়ানত করে; (২) যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে; (৩) যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে এবং (৪) যখন কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করে, তখন সে অশ্লীলভাষী হয় (অশ্লীল গালমন্দ করে)। (মিশকাত, হাদিস : ৫৬)

যাদের মধ্যে এসব ত্রুটি থাকে, তারাই সাধারণত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। এতে তারা সাময়িক সুবিধা ভোগ করলেও তাদের আখিরাত ধ্বংস হয়ে যায়। সাময়িকভাবে বিভিন্ন মহলে নন্দিত হলেও হাদিসের ভাষায় তাদের নিকৃষ্ট আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত এ ধরনের কাজ থেকে নিজেকে সদা বিরত রাখা।