ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধ অনিবার্য! সেভাবেই আমাদের প্রম্তুতি নেয়া উচিত। মিয়ানমার বাংলাদেশের জন্য চরমভাবে হুমকির কারণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে নিকট ভবিষ্যতে। বাইরে থেকে কিছু কিছু রাষ্ট্রের বিশেষ করে চিনের ইন্দ্রনে মিয়ানমার বাংলাদেশের জন্য আরও বড় উসকানিমূলক কাজ করার সম্ভাবনাই বেশী। রোহিঙ্গা ইস্যুতেই এই বিবাদ দিন দিন জটিল হবে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ত্বে আঘাত আসলে জনগন এটাই চাইবে।
মোট কথা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া আমাদের গলায় কাটা আটকাবার কারণ। এটাকে বাদ দেয়ার আর সুযোগ নাই। হয় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মেনে নিতে হবে নয়ত যুদ্ধের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। হঠাৎ কোন রাতে যদি বিমানহামলার শব্দে চট্রগ্রাম কেঁপে উঠে তবে সেটা খুবই স্বাভাবিক বিষয় আমার কাছে। আমরাই এটা হতে দিয়েছি।
পাশাপাশি দুটি রাষ্ট্র যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মত যতগুলো কারণ থাকে তার প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশ মিয়ানমারের মধ্যে ঘটে গেছে। তাই আমরা একটি অনিবার্য যুদ্ধের দিকের এগিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তারপরও এটাকে এড়িয়ে যাওয়ার আর সুযোগ নেই।
ইন্ডিয়া রাষ্ট্র হিসেবে যাই হোক তারা চাইবে না মায়ানমারের সাথে বাংলাদেশের বিবাদ যুদ্ধ পর্যন্ত গিয়ে গড়াক। কারণ যুদ্ধে জড়ালে চীন ও আমেরিকা বাংলাদেশের কাছে অস্র বিক্রয় করার জন্য প্রতিযোগীতা করবে। ইন্ডিয়া চাইবে না বাংলাদেশের হাতে ভারী কোন অস্র আসার মত কোন কারণ তৈরি হোক। কিন্তু চীন আর আমেরিকা তাদের নিজেদের স্বার্থে সব ধরনের কৌশল গ্রহণ করবে। বিশেষ করে চীনের ভূমিকা খুবই আগ্রাসী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই যুদ্ধটি কেন অনিবার্য? একে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশ সরকার তো যুদ্ধের পক্ষে না!
অনেক প্রশ্নই রয়েছে। কিন্তু আমরা যতদিন রোহিঙ্গাদের প্রশ্রয় দিচ্ছি ততদিন যুদ্ধের জন্য ক্ষেত্র তৈরির পটভূমি শক্ত থেকে শক্ত হচ্ছে। সত্যি কথা হচ্ছে, জাতীসংঘ বলেন আর যেই সংঘ বলেন না কেন! মিয়ানমারকে তারা কথা শুনাতে ব্যর্থ অথবা তারা শক্তি প্রয়োগ করার মত অবস্থানে নেই। রোহিঙ্গা সমস্যাটি তাই সহজেই সমাধান হচ্ছে না। অতীত আর বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করলে এটাই বলতে বাধ্য হবেন যে, মায়ানমার রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরও কোন কথাকে কানে দিচ্ছে না। বরং তারা সীমান্তে তাদের উস্কানী দিন দিন বাড়ছে। তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ত্ব হুমকীর মুখে ফেলেছে বহুবার। শুধুমাত্র বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র হওয়ায় যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়ার সব রকমের চেষ্টা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে সমস্যাটি সমাধানের কোন আশা তো নেই বরং আরও জটিল হবে।
বাংলাদেশের সামনেই একটি জাতীয় নির্বাচন। সব বিষয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। সবার আগে আমাদের দেশ। আমি কখনই চাই না এমন পরিস্তিতি তৈরি হোক। কিন্তু ভয় পাবার যথেষ্ট কারণ রয়ে গেছে। বিশেষ করে আজ চট্টগ্রামবাসীর জান মাল যেকোন সময় হুমকীর মুখে পড়তে পারে। যদি মিয়ানমার চট্টগ্রাম আক্রমণ করে বসে তবে আমরা না চাইলেও যুদ্ধ কি কেউ আটকাতে পারবে? বাংলাদেশের সেনা বাহিনী , বর্ডার গার্ড, নৌ বাহিনী চট্টগ্রামে বিশেষ সতর্ক অবস্থানে থাকা উচিত।
লেখক-
ওবায়দুল হক সিপন