আসসালামু আলাইকুম, রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ ই ডিসেম্বর ২০২২ ইং। অতীতের নির্বাচনগুলোর মতই রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নির্বাচন কেন অতি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তাই নিয়ে আলোচনা করাই আজকের মূল উদ্দেশ্য।
আমরা দেখছি, রবিরবাজার দ্রুত সম্প্রসারিত বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশাল এই বাজার নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী একটি বাজার কমিটি নির্বাচিত করা অতি আবশ্যক। আমি রবিরবাজারের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতি নিয়ত অনেকগুলো সমস্যার সম্মুখীন হই। যা দ্রুত নিরসনের জন্যে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তা না হলে আগামীতে আমরা বাজারবাসী অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হব।
আজকে আমরা বাজারের দিকে তাকালে মনে হয় বাজারটি অভিভবকহীন। বিশেষ করে পূর্ব রবিরবাজারের রাস্তার অতি করুন অবস্থা। কিছুদিন আগে যে কাজ হয়েছে তাতে কতটা কাজ হওয়ার কথা ছিল, কারা কাজ করার কথা ছিল, লাইসেন্সধারী ঠিকাদার কেন কাজ না করে চলে গেল, কাজের এখন কি অবস্থা তা আমরা সবাই কম বেশি জানি। ইউনিয়নের সামনের রাস্তাও আজ অবহেলিত। রাস্তার এই করুন অবস্থা নিয়ে আমরা কার কাছে যাব তা খুঁজে পাই না। যার কাছে যাব সেই যদি ভক্ষক হয় তবে চুপ করা থাকাই উত্তম। তাই আমরা বাজারবাসী চুপ করে আছি। আসন্ন নির্বাচনে আমরা এর জবাব দেব। আমাদের ব্যবসায়ীদের শক্তি আমরা দেখাব ৭ তারিখের নির্বাচনে।
একটু বৃষ্টি হলেই যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় তা দেখে খুবই দুংখ হয়। একজন সাধারণ ব্যবসায়ী এবং পথচারী হিসেবে আমরা যারা প্রতিদিন রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করি তারাই ভাল জানি। ড্রেনেজ ব্যবস্থা এখনও আদি যুগের। এই জলাশয়ের ভাইরাসের সংক্রমণে আমরা আমাদের বাসা বাড়িতে ছোট ছোট শিশুদের বেশি ক্ষতি করছি। আমরা নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের মাধ্যমে বাসাবাড়িতে রাস্তার ড্রেনের ভাইরাস বাসাবাড়িতেও যাচ্ছে। আর এতে ছোট ছোট শিশুরা অনেক বেশি অসুস্থ হচ্ছে। শিশু রোগীদের এত দীর্ঘ লাইন ডাক্তারদের চেম্বারে তার মূল কারণই হচ্ছে আমাদের অনইচ্ছায় এসব জলাবদ্ধ রাস্তা দিয়ে আমাদের হাটাচলার বাধ্য বাধকতা। ড্রেনের এসব নোংরা পানি যখন আমাদের শরীরে বিশেষ করে পায়ে লাগছে তখন আমাদের মাধ্যমে আমাদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে আমাদের শিশুরা। এই জলাশয় দূর করতে একটি শক্তিশালী বাজার কমিটি তৈরি করতে হবে যারা আমাদের সবার কাছে সৎ এবং উপজেলে ও জেলা পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করে বাজারবাসীর সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করতে সক্ষম।
বাজার বিশাল হওয়ায় এর চৌকিদারী বিলও কম নয়। সেই তুলনায় আমাদের বাজার নিরাপদ নয়। অতি সম্প্রতি যে চুরিগুলো হয়েছে তা প্রতিটি ব্যবসায়ীকে গভিরভাবে ভাবায়। বাজারবাসীর নিরাপত্তা আজ কোথায়? আমাদের কষ্টে অর্জিত সম্পদ দোকানে রেখে আমরা নিরাপদে বাড়িতে গিয়ে ঘুমাতে ভয় পাই। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেবার মত এবং কোন অগঠন গঠলে সঠিক জবাব দেবার মত বাজার কমিটি আমরা গঠন করতে পারি নি, তাই আজ আমরা এত অসহায়। আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে আমরা বাজারবাসী দলমত নির্বিশেষে সত্যিকারের প্রার্থীদের আমাদের বাজারবাসীর অভিভাবকরূপে নির্বাচন করব। ইনশাআল্লাহ।
গরুর বাজার, মাছের বাজার, লামা বাজারসহ মেইন রাস্তাগুলোতে উন্নতমানের লাইটিং ব্যবস্থা করা আজ সময়ের দাবি। নিবু নিবু আলো দূর করে একটি চকচকে বাজার গড়ে তুলতে হবে। এই দ্রুত সম্প্রসারিত বাজারকে এখনই সঠিক পরিকল্পনায় নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আমরা পিছিয়ে পড়া জাতীতে পরিণত হব। বাজারের যেকোন অনিয়মে সঠিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
রাস্তার যানযট কমানোর জন্য চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখায় বাজারের রাস্তায় দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। এসব নিরসনে চাই নিদিষ্ট জায়গায় গাড়ি পার্কিং করার উদ্যোগ। বিশেষ করে, রবিরবাজার টু কুলাউড়া সিএনজি স্টেশন আসলে কোথায় আমরা বুঝে উঠতে পারি না। যেখানে ইচ্ছা সেখান থেকে যাত্রী তুলা হয়। মসজিদের সামনে থেকে সরানো হলেও আসলে মসজিদের সামনেই তারা পার্ক করে রাখে এখনও। নামাজীদের নামাজের সময় এতে অনেক অসুবিধা হয়। নির্দিষ্ট জায়গায় পার্ক করে রাখলে সহজেই এই সমস্যা সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু কারো কথা বলার অধিকার নেই। যে যেমন পারছে তেমনই চলছে। অনিয়মকারীদের জরিমানাসহ আইনত ব্যবস্থা নেযার প্রয়োজন হলে তাই করা উচিত। একজনের জন অনেকে কেন সমস্যায় পড়বে। সচেতন বাজারবাসী তাই আগামী বাজার কমিটির নির্বাচনে তাদের সকল অনিয়মের জবাব দেবে।
তাছাড়া বাজারের বাইপাস সড়কগুলো এত করুন যে বাজার বাইপাসের রাস্তা ধরে গেলে হার্টের বাইপাস করানোর অবস্থা হয়। বাজার বাইপাসের রাস্তার মুখে বড় সাইনবোর্ড দিতে হবে এবং রাস্তাগুলো মেরামত করতে হবে।
পৃথিমপাশার মধ্যে বাজার হলেও এই বাজারে অনেক দূর দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে ব্যবসা করছেন। রবিরবাজারের উন্নয়ন মানে আশেপাশের সকল এলাকার উন্নয়ন। বাজার যখন সুন্দর ব্যবস্থাপনায় আসবে তখন আমরা মানুষ হিসেবে সুন্দর মানুষত্ত্বের পরিচয় বহন করব। অন্য এলাকার মানুষ তাই আমাদের মডেল হিসেবে নিবে। বিশেষ করে শুক্রবার অনেক দুর থেকে মানুষেরা আসে এবং রবিরবাজার জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। তারা এই ধারনা নিয়ে যান যে, এই এলাকার মানুষ হরণ দিলে কানে শুনে না। রাস্তার মধ্যে পান - সুপারির ময়লা ফেলে কযেকজন কিন্তু বদনাম হয় পুরো এলাকাবাসীর। আমাদেরই নোংরা মানুষ হিসেবে তারা মনে ধারনা নিয়ে যায়। তাই বাজারের মধ্যে কিছু দূর পরপর ডাস্টবিন ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে। সেখানে পরিষ্কার পরিচন্নতার বাণীগুলো প্রচার করতে হবে। মসজিদে খুতবায় এসব পরিষ্কার পরিচন্নতার আলোচনা গুরুত্বের সাথে বয়ান দেয়ার নির্দেশ দিতে হবে। সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে এসব নিয়ে বেশি বেশি কথা বলতে হবে। মানুষ সচেতন হবে যদি আমাদের দ্বায়িত্বে যারা আছেন তারা সচেতন হোন এবং সুন্দরভাবে চলার পরিবেশ তৈরি করে দেন।
পরিশেষে বলব, বাজার কমিটির নির্বাচন আসলেই অতি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমাদের সুচিন্তিত মতামত ভোটের মাধ্যমে তুলে ধরব। ইনশাআল্লাহ। এজন্য বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ ঐক্য হয়ে কাজ করতে হবে।
আমি আইটিহল ট্রেনিং সেন্টার এর পরিচালক। বাজার কমিটির একজন ভোটার হিসেবে সকলের কাছে এই আশা করছি যে, আপনারা সৎ ও যোগ্য প্রার্থী সিলেক্ট করবেন। দল মত কিংবা ব্যক্তিগত কোন আক্রোশ থেকে নয় বরং দশের কল্যাণে যিনি কাজ করার যোগ্য তাকেই ভোট দিবেন।
আসলে আল্লাহ আমাদের একটি সুযোগ দেন। আমরা যেন আমাদের জন্য যোগ্য নেতা নির্বাচন করতে পারি। আমরা যদি এই কাজটি সৎভাবে না করি তাহলে এর জবাবও আমাদের দিতে হবে। আমরা ইনশাআল্লাহ, অতীতের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সৎ যোগ্য প্রার্থীকে আমাদের ভোট দেব।
প্রতিটি পদে আমরা সৎ যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করব। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে সভাপতি ও সিক্রেটারী পদে আমাদের বিশেষ নজর দেয়া উচিত। এই দুটি পদে যোগ্য প্রার্থী সিলেক্ট করা খুবই বাধ্যতামূলক।
এই নিউজটি অন্যের সাথে শেয়ার করে বাজারবাসীর সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন এবং সৎ যোগ্য প্রার্থী সিলেক্ট করতে অন্যকেও সচেতন করুন।
আপনাদের সহযোগিতায় চির কৃতজ্ঞ
মো ওবায়দুল হক,
আইটিহল,
এসএম মার্কেট, রবিরবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৮-০২৩৭৫৯