Iklan

header ads

যে ভাইরাস মানুষের আত্নহত্যার ইচ্ছাকে বাড়িয়ে দেয়

টক্সোপ্লাজমা গুন্ডি নামে প্রকৃতিতে এক ধরনের ভাইরাস আছে। মানুষের আত্নহত্যার ১০ ভাগের মধ্যে ১ ভাগ এই ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। অবাক হওয়ার মত বিষয় হলো এরা মানুষের ব্রেনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।



গবেষণায় পাওয়া গেছে, এই ভাইরাস শুধুমাত্র বিড়ালের শরীরে প্রবেশ করে সেখানে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স করতে পারে। অন্য কোন শরীরে এরা সেক্সুয়ালি বংশ বিস্তার করতে পারে না।

বিড়াল যখন পায়খানা করে তখন সেটি প্রকৃততে উন্মুক্ত হয়। তখন তারা বিভিন্ন উপায়ে মানুষের শরীরে আসতে পারে। ফলমূল বা শাকসবজি অথবা হাস মুরগির শরীরেও এরা প্রবেশ করতে পারে।

যখন তারা অন্য শরীরে প্রবেশ করে এডাল্ট হয় তখন তারা সেক্সুয়াল চাহিদার প্রবনতা থেকেই আবার বিড়ালের শরীরে প্রবেশ করতে চায়। এজন্য তারা পোষক শরীর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সব রকমের প্রচেষ্টা চালায়। তারা ব্রেনের নিউরোনগুলোর মধ্যে যেগুলো ভয় পাবার উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এই ভাইরাস সেই নিউরোনগুলোকে অকার্যকর করে দেয়।

উদাহরণ স্বরুপ, ভাইরাসটি একটি ইদুরের শরীরে প্রবেশ করেছে। এখন ইদুরের শরীর থেকে বিড়ালের শরীরে প্রবেশ করতে হবে। এজন্য ভাইরাসটি ইদুরের ব্রেনের ভয় পাবার ক্ষমতা নষ্ট করে দেবে। ফলে ইদুর যেখানে বেড়াল দেখে ভয় পাবার কথা সেখানে সে বেড়ালের কাছাকাছি যেতে চাইবে। বেড়ালকে ভয় পাবে না। এখানে আরও একটি ভয়ংকর বিষয় ঘটিয়ে দিতে পারে এই ভাইরাস। আর তা হল, বিড়ালের প্রস্রাবের প্রতি এরা তীব্র আকর্ষণ সৃষ্টি করাত পারে। ফলে ইদুর বেড়ালের কাছাকাছি চলে যায়। এতে সহজেই বেড়াল ইদুরকে মেরে খেয়ে ফেলে। আর এভাবে ভাইরাসটি ইদুরের শরীর থেকে বিড়ালের শরীরে প্রবেশ করে।

যদি এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং মানুষের শরীর থেকে বিড়ালের শরীরে প্রবেশ করতে চায়। তখন ভাইরাসটি মানুষকে তীব্র স্পীডে গাড়ি চালাতে উৎসাহ দেয়। রিক্স নিয়ে রাস্তা পার হতে উৎসাহ দেয়। এমনকি ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে ১০ ভাগের ১ ভাগ ক্ষেত্রে আত্নহত্যা পর্যন্ত ঘটিয়ে দিতে পারে এই ভাইরাস। বিশেষ করে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের সব থেকে বেশি ক্ষতি করতে পারে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস আরও একটি চেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে মানুষের শরীরে, আর তা হলো মানুষের অটো রেসপন্স কমিয়ে দিতে পারে।

অটো রেসপন্স সম্পর্কে হয়ত আমরা সবাই জানি। তারপরও স্বরণ করিয়ে দিতে বলি। আমরা যখন মোটরসাইকেল চালাই তখন হঠাৎ করে আমাদের সামনে একটি গর্ত বা প্রাণী চলে আসলে আমরা ব্রেক দেই বা পাশ কাটিয়ে চলে যাই। পাশ কাটিয়ে চলে যাব না কি ব্রেক করব এই সিদ্ধান্ত নিতে হয় খুব দ্রুত। স্বাভাবিক ভাবে আমাদের ব্রেন কিভাবে কাজ করে? আমরা ব্রেনকে কোন একটি তথ্য দেই ব্রেন সেটি করে। যেমন আমরা ওয়াশরুমে বসেছি। আমাদের ব্রেনে সিগনাল যাচ্ছে আমি ওয়াশরুমে বসেছি। তখন সে আপনার পাকস্থলীর ভেতরে কিছু বাকি আছে কি না যা শরীর থেকে বের করে দিতে হবে সেগুলো খুজে বের করে। এবং টুটাল প্রসেসে শরীরের যেসকল অংগ জড়িত সবগুলোকে একটিব করে তুলে। ব্রেনে এই তথ্য বা সিগনাল যাওয়ার বিষয়টি সব সময় যে আপনি সরাসরি দিবেন তাও নয়। আপনার শরীরে অতিরিক্ত বজ্র জমেছে মুত্রথলিতে? ব্রেনের কাছে মুত্রথলি সিগনাল পাঠাবে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন মুত্রথলি পূর্ণ। এটাকে খালি করে তার স্বাভাবিক কাজের উপযুগি করে দিতে হবে। তখন ব্রেনের সিগনাল অনুযায়ী ব্রেন আপনাকে কি করতে হবে সব ধরনের পরামর্শ দেয়। এটা হচ্ছে ব্রেনের স্বাভাবিক কাজ। আর অটো রেসপন্স হচ্ছে ব্রেন এখানে কোন সিদ্ধান্ত দেয় না। সে যেখান থেকে সিগনাল এসেছে তার উপরই সিদ্ধান্ত নেয়ার দ্বায়িত্ব দিয়ে দেয়।

উপরে যে কথাটি বলছিলাম, ধরুন আমাদের Hasin Hayder ভাই বাইক চালাচ্ছেন। হঠাৎ করে সামনে গর্ত চলে আসল। এখন তিনি ব্রেক করবেন, না কি পাশ কেটে যাবেন, না কি গর্তের উপর দিয়ে যাবেন এই সিগনাল শরীরে হাত চোখসহ যেসকল অর্গান আকষিক এই পরিস্থতির মুখোমুখি হয়েছে সকল অর্গান থেকে ব্রেনে সিগনাল গেল। ব্রেনকে হাত বলছে আমি ডানে যাব না কি বায়ে যাব। চোখ ব্রেনকে বলছে, গর্ত অতটা গভীর না। সুজা চালিয়ে যেতে পার আবার ডানেও কেটে যেতে পারো। তোমার সামনে দুটি অপশন আছে কিন্তু তুমি বামে যেতে পারবে না। বামে আরও বড় গর্ত। এদিকে পা ব্রেনে সিগনাল দিচ্ছে, কিছু কি সিদ্ধান্ত হয়েছে না কি ব্রেক দেব। শরীরের সবগুলো অর্গান হঠাৎ করে একটিব হয়ে যাওয়ায় সমস্ত শরীর শিউরে উঠেছে। কি হয়েছে কি হয়েছে? নিজেকে বাচাও। এই এতগুলো সিগনাল যখন ব্রেনে যাচ্ছে তখন ব্রেনও বিভ্রান্ত। সে কোনটা রেখে কোনটা করবে। তখনই ব্রেন মজার একটি কাজ করে। ব্রেন তখন একই রকম ঘটনায় পূর্বে আমাদের যে অভিজ্ঞতা আছে সেগুলোর আলোকে কুইক রেসপন্স করে। হাতকে বলে, এই ঘটনায় তুমি ইতোপূর্বে যা করেছো তাই করো। পা কে বলে তোমার যেমন অভিজ্ঞতা তুমি তাই করও। চোখকে বলে তোমার যেমন অভিজ্ঞতা তুমি তাই করও।

তখন চোখ বড় হয়ে আসে। সে তখন চায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে সে যেন অন্য ইন্দ্রকে আরও বেশি তথ্য দিতে পারে তাই সে আরও বেশি দেখায়। হাত তখন অটোম্যাটিকেলী ডানে মুভ করে। অতীতের একই অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পরিস্থতির আলোকে টুটাল কাজটি খুবই দ্রুত করে ফেলে এবং সেটা ব্রেনের পুর্ন পর্যালোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর এটাই অটো রেসপন্স।

আবার ধরুন আমাদের Shakil Arefin ভাই সিলেটে বেড়াতে এসেছেন। কোন রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছেন। রেস্টুরেন্টের ওয়েটার খাবার পরিবেশনের সময় পানির গ্লাস ফেলে দিল। ঠিক এই মুহূর্তে ভাই খাবার মুখে দিয়ে হাত প্লেটে নামিয়ে আনছেন। কিন্তু এ কি? ভাই প্লেটে হাত না নামিয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়ে গ্লাস ধরে ফেললেন। ওয়েটারের দিকে চোখ রাঙ্গানি দিয়ে আবার খেতে মনোযোগী হলেন। তিনি একটি কাজ করছেন এমন সময় কোন সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া যে অন্য একটি কাজ করে ফেললেন এটাই অটো রেসপন্স।

আরও উদাহরণ দেব? ধরুন Muslim Uddin ভাইয়ের লুঙ্গি পরে বাড়ির ছাদে হাটছেন। এমন সময় দেখলেন BM Saiful Ahmed Suju ভাইয়ের ছাদ বাগানের একটি পোকা আপনাকে তেড়ে আসছে। আপনি কিছু বুঝে উঠার আগেই মুখের দিকে হাত ছু মেরে পোকাকে সরিয়ে দিলেন। আপনি তো অবাক, কিভাবে কত দ্রুত এই কাজ টি করলেন? এটা আসলে অটো রেসপন্স।

উদাহরণগুলো মজা লাগছে? আরও বলি তাহলে, Al Amin Ahsan ভাই একটি অর্ডার পেয়েছেন। ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলে বলে হাটছেন রেল পথ ধরে। হঠাৎ হরণ শুনে পেছনে তাকিয়ে দেখলেন রেল গাড়ি তার উপর দিয়ে উঠে যাচ্ছে, তিনি দ্রুত লাফ দিয়ে সরে গেলেন। এটাই অটো রেসপন্স।
আরও একটি উদাহরণ দেই, এটাই শেষ উদাহরণ। লালসালুর লাল্লু মিয়া হরফে ফখরুল ইসলাম ভাই প্রডাক্ট রেডি করছেন। কাচের বোতলে ভরে তিনি প্যাক করে কুরিয়ার বয়কে মাল বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এমন সময় মাথার উপরের ফ্যানটি খসে পড়ল। (কি রে ভাই? মানুষের গুলোরে আটকান আর নিজেরটা এভাবে ঢিল দিয়ে রাখছেন কেন?) কিন্তু কোন অঘটন ঘটার আগে ভাই নিজে টেবিলের নিচে মাথা নিয়ে গেলেন এবং কুরিয়ার বয়ের হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে তাকেও বসিয়ে দিলেন। এটাও অটো রেসপন্স।

উদাহরণ দিতে দিতে মনে পড়ল, আমার বন্ধু Mustafizur Rahman গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ শিখেছে। তার কাজ আমি এখনো পরখ করে দেখি নি। তবে তার প্রোফাইল ঘেটে যা বুঝলাম সে পরিশ্রম করছে। ১০০% ট্রাস্ট করতে পারেন। আমি তাকে যতটা চিনি সে লেগে থাকার মতো পরিশ্রমী একটা ছেলে। এবার চলুন পূর্বের আলোচনায় ফিরে যাই। আমরা টক্সোপ্লাজমা গুন্ডি ভাইরাস নিয়ে আলোচনায় ছিলাম। এই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে আত্নহত্যা প্রবনতা বাড়িয়ে দিতে পারে। শরীরের অটো রেসপন্স বন্ধ করে দিতে পারে। অটো রেসপন্স নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে যেসকল উদাহরণ দিয়েছি এগুলোর মধ্যে ঘটনাগুলো কাল্পনিক।
যাই হোক, যখন টক্সোপ্লাজমা গুন্ডি ভাইরাস শরীরে প্রকট হয় তখন এই অটো রেসপন্স করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে যেসব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন মানুষ সেই স্বাভাবিক কার্যক্রমটি হারিয়ে ফেলে। ফলে অঘটন ঘটে যায়। একবার চিন্তা করে দেখুন, প্রতিদিন যত এরকম অঘটন ঘটছে তার ১০ ভাগের ১ ভাগ ঘটনার পেছনে এই ভাইরাসটি দায়ী।

তাহলে কি বিড়াল থেকে দূরে থাকব?
দেখুন বেড়াল থেকে দূরে থাকলেই আপনি ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে পারবেন না। যেকোন উপায়ে সে আপনার পাশে আসবেই। ফলমূল হাস মুরগি হয়েও ভাইরাসটি আসতে পারবে। আমার ব্যাক্তিগত মত হচ্ছে বেড়ালের পাশাপাশি থাকা। বিশেষ করে যুবক বয়সে বা তরুণ বয়সে। তাহলে কি হবে? ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করবে এবং শরীরে এন্টিবডি তৈরি হবে। এন্টিবডি একবার তৈরি হয়ে গেল আর কোন সমস্যা নাই। এই ভাইরাস প্রবেশ করে আর কোন সমস্যা করতে পারবে না। আর তরুন বয়সে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সব থেকে বেশি থাকে। তাই এই সময়ে ভাইরাসটির কার্যক্রম শরীরে নষ্ট করতে হবে।

সতর্কতা: যদি বাড়িতে ইতিপূর্বে বেড়াল না থাকে এবং আপনি গর্ভবতী হোন তবে বাড়িতে নতুন করে বেড়াল আনবেন না গর্ভকালীন সময়ে। এই সময়ে শরীর নাজুক থাকে। সে অন্য কাজে বেশি মনোযোগী থাকে। শাক সবজি ফলমূল ভালোভাবে ধুয়ে খাব। মাংশ ভালোভাবে রান্না করে খাব।