আপনার ব্যবসার প্রচার ও প্রসারের জন্য কম খরচে উপযুক্ত প্লাটফর্ম হতে পারে WordPress। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করতে কিংবা আপনি নিজে কোন কোডিং জ্ঞান ছাড়াই ওয়ার্ডপ্রেস টেমপ্লেট ব্যবহার করতে পারেন। টেমপ্লেটগুলি পেতে আপনাকে একটি প্রিমিয়াম থিম ক্রয় করতে হবে। যা আকর্ষনীয় এবং দারুণ কিন্তু অল্প বাজেটে কিনতে পারেন। একটি প্রিমিয়াম থিম ক্রয়ের খরচ সাধারণত ২০-২০০ ডলার হতে পারে।
৩-২০ ডলার প্রতিমাসের খরচ করে ভাল স্পীডের ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং নিতে পারেন। যদি আপনি কোন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার না হন এবং পেশাদার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য কাউকে হায়ার করতে চান, তাহলে আপনাকে পেশাদার কাজের মূল্য জানা থাকতে হবে। ডেভেলপারদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে তাই তাদের মূল্যবান কাজের দাম এবং সার্ভিস মান ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। মাসিক বেতন হিসাবে সাধারণত ৩০০ থেকে ৫০০০ ডলারের মধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলাপার হায়ার করা যেতে পারে।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করলে যেসকল সুবিধা পাওয়া যাবে -
অল্প খরচ: ওয়ার্ডপ্রেস এমন এক ফ্রী ওপেনসোর্স প্লাটফর্ম যা দিয়ে খুব সহজে বড় ধরনের ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জ্ঞান ছাড়া বিশেষ করে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে উন্নত দক্ষতা ছাড়াই ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। ওয়ার্ডপ্রেস স্ক্রিপ্ট ফ্রী তে ডাউনলোড ও ইন্সটল দেয়া যায়। একটু কাস্টমাইজ করে অল্প সময়ে ব্যবহার উপযোগী করে ওয়েবসাইট পাবলিশ করা যায়। তাই খরচও অন্য সব প্লাটফর্ম থেকে কম।
থিম ও প্লাগিন: ওয়ার্ডপ্রেস বিভিন্ন থিম ও প্লাগিন সাপোর্ট করে যা আপনাকে অনেক সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করতে সাহায্য করবে। থিমগুলি আপনাকে আকর্ষণীয় ডিজাইন ও প্রফেশনাল লুক প্রদান করবে এবং প্লাগিনগুলি আপনাকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও সাধারণ কাস্টমাইজেশন এর কাজ করতে সাহায্য করবে। অনেক প্লাগিন ফ্রী তে ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার ব্যবসার প্রচার ও প্রসারে সাহায্য করবে।
ওয়েবসাইট হোস্টিং: ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট হোস্টিং সাধারণত সস্তায় পাওয়া যায়। বিভিন্ন হোস্টিং প্লান আপনার বাজেট এবং প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন কোম্পানি অফার দিয়ে থাকে। আপনি বাজেটমত একটি ভাল হোস্টিং প্লান নির্বাচন করতে পারেন যা আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের উচ্চ পারফরম্যান্স এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করবে।
মোটামুটি কম খরচে উপযুক্ত ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। তবে, মনে রাখবেন যে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন, হোস্টিং প্ল্যান, থিম ও প্লাগিন ক্রয় করতে অতিরিক্ত খরচ লাগতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা, ব্যবহারিক জ্ঞান এবং ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত সাপোর্ট ব্যবহার করে, আপনি একটি মানসম্পন্ন এবং কার্যকর ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির পজেটিভ এবং নেগেটিভ দিক আরও বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো নিম্নে:
পজেটিভ দিকগুলি:
সহজ ব্যবহার: ওয়ার্ডপ্রেস একটি ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ একটি প্লাটফর্ম যা যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। এর ইন্টারফেস ব্যবহারকারীদের কাছে সহজ এবং পরিচিত।
বিশাল থিম ও প্লাগিন ভান্ডার: ওয়ার্ডপ্রেস একটি বিশাল প্লাটফরম এর থিম ও প্লাগিন এর বিশাল ভান্ডার রয়েছে অনলাইনে। এর মাধ্যমে আপনি স্বল্প পরিসরে ওয়েবসাইটকে কাস্টমাইজ এবং মার্কেটিং কাজে আপনার প্রয়োজনগুলি মেটাতে প্লাগিনগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
সাপোর্ট: ওয়ার্ডপ্রেসের উপর অনলাইনে অনেক ফরাম ও ব্লগ রয়েছে। যেকোন সমস্যায় সমাধান খুজে বের করাও সহজ। ওয়ার্ডপ্রেস কমিউনিটি খুবই সক্রিয় এবং প্রশিক্ষণ, টিউটোরিয়াল, ফোরাম, মেইলিং ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের সাপোর্ট দিয়েও থাকে।
নেগেটিভ দিকগুলি:
সীমিত কাস্টমাইজেশন: যদিও ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশনের জন্য বিভিন্ন থিম ও প্লাগিন রয়েছে, তবে এই কাস্টমাইজেশন সীমিত হতে পারে এবং কিছু নিজস্ব ডিজাইন পরিবর্তন করতে সমস্যা হতে পারে।
সাইট সুরক্ষা: ওয়ার্ডপ্রেস একটি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম, তাই এটি হ্যাকারদের জন্য একটি লক্ষ্য। সাইটের নিরাপত্তা নিয়ে অনুশীলন করতে হয় এবং উচ্চতর সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।
আপডেট এবং সাপোর্ট সমস্যা: ওয়ার্ডপ্রেস প্রতিনিয়ত আপডেট হয় এবং যদি আপনি কাস্টম কোড ব্যবহার করে থাকেন, তবে আপডেট সমস্যার জন্য মূল ফাংশনালিটি কাজ না করতে পারে। ছোট ছোট সমস্যাগুলির জন্য সাপোর্ট পাওয়ার জন্য ওয়ার্ডপ্রেসের অফিশিয়াল সাপোর্ট দল থেকে হেল্প পেতে অনেক সময় দেরী হতে পারে।
উপরে কিছু পজেটিভ ও নেগেটিভ দিক তুলে ধরা হয়েছে তাই এটি ব্যবহার করার আগে সীন্ধান্ত নেয়া সহজ হবে। যদিও নেগেটিভ দিক রয়েছে, তবুও ওয়ার্ডপ্রেস খুবই জনপ্রিয় এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট তৈরির প্লাটফর্ম হিসাবে পরিচিত। সঠিক কনফিগারেশন, সুরক্ষা ও পর্যাপ্ত সাপোর্টের থাকলে ওয়ার্ডপ্রেস উপযুক্ত ওয়েবসাইট তৈরির জন্য একটি ভাল পছন্দ হতে পারে।