Iklan

header ads

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫৬ জন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটির ৫৮ ওয়ার্ডে বেশি মাত্রায় এডিস মশার লার্ভা মিলেছে। জরিপে ১৮ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়াকে উচ্চঝুঁকি মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ১৭ থেকে ২৭ জুন জরিপ চালিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে


কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. একরামুল হক বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৪ ওয়ার্ডের মধ্যে ৪০টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির (ডিএসসিসি) ৭৫ ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৮টিতে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। পরিচালিত জরিপে দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৮টিতে এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। এ ওয়ার্ডগুলোর ৫৪৯ বাড়িতে মিলেছে এডিসের লার্ভা। 

এ ওয়ার্ডগুলো উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।’ রাজধানীর ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে বলে জানান তিনি। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮ ওয়ার্ডে চালানো এ জরিপে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক মশার প্রজননস্থল শনাক্ত, পূর্ণাঙ্গ মশা ও লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, রাজধানীর ১৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে, যেখানে কোনো এলাকার ৫ শতাংশ বাড়িতে এ লার্ভা পাওয়া গেলে সেই পরিস্থিতিকে ধরা হয় ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত রোগ। এডিস মশার লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা জন্মায়। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি লার্ভা পাওয়ার অর্থ ঢাকায় এবার এডিস মশাও বেশি পাওয়া যাবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘লার্ভা বেশি পাওয়ার অর্থ সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এখন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকবে। এ পরিস্থিতি আগস্ট পর্যন্ত চলবে। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশেই আক্রান্ত বাড়বে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, গাজীপুর, পটুয়াখালী, বরিশালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি থাকবে।’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন হটস্পট ম্যানেজমেন্টে জোর দিতে হবে। হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর ঠিকানা নিয়ে হটস্পট শনাক্ত করতে হবে। এরপর ওই জায়গায় ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নিয়ে উড়ন্ত মশা নিধন করতে হবে। যেসব জায়গায় রোগী নেই, সেখানে লার্ভা শনাক্ত ও ধ্বংস করতে হবে। 

এ কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’ ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মাস্টাররোল শ্রমিকদের ছুটি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে। গতকাল নগর ভবনে এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বিষয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করেছে ডিএনসিসি। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গতকাল আরও ৪৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, এ সময়ে মারা গেছেন চারজন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ১৯৩ জন, মারা গেছেন ৫৬ জন।